কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন



ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থানে সহায়তা করে এরকম কোনো মেডিকেশন বা ওষুধ সেবনে (ইনজেকশন বা অন্য কোনো ওষুধ) চার ঘন্টার চেয়ে বেশি স্থায়ীভাবে ইরেকশন থাকে তবে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
নিন্মোক্ত মেডিকেল জটিলতায় ইরেকশনের সমস্যা হতে পারেঃ
পর্যাপ্ত পরিমাণ য্তন নেয়ার পরেও যদি সমস্যার কোনো সাবধান না ঘটেঃ
আপনার যদি ইরেকশন প্রবলেমের সাথে সমন্বিত হয় মূত্রতন্ত্র সম্পর্কীয় কোনো সমস্যা, তলপেটে ব্যথা বা পশ্চাদদেশের নিচের দিকে ব্যথা, জ্বর অথবা আঘাতজনিত কারণে অন্য কোনো উপসর্গ থাকে তাহলেও জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন।
হঠাৎ করে দুই এবার ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থান না ঘটা সাময়িক হতে পারে। এটি আশা করা যায় ধীরে ধীরে অবস্থায় ফিরে যাবে। তাই এক্ষেত্রে আগেই ধারণা করা উচিত নয় যে, উত্থানজনিত সমস্যাটি আবারও ঘটবে যদি সম্ভব হয় তবে উত্থানজনিত যে সমস্যাটি ঘটেছিল সেটির কথা ভুলে যান এবং পরবর্তীতে আপনি আরো সুখকর যৌনানুভূতি লাভ করবেন মনে মনে এমন ধারণাটি পোষণ করুন। যৌন পার্টনারের সঙ্গে আপনার সমস্যা নিয়ে, যৌন আচরণে আপনার কোনো ভয়-ভীতি বা দুশ্চিন্তা থাকলে একেবারে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করুন। এতে অনেক বিষয়ে ডাক্তারের সাহায়তা ব্যতীত একটি ভালো পারস্পারিক সমঝোতায় পোঁছানো যায়।
যদি দুই সপ্তাহের ভেতরে আপনাদের সমস্যাটির সমাধান না হয় এবং প্রতি চারবারে একবার করে ইরেকশনের সমস্যা হয় তবে এ বিষয়ে কোনো প্রফেশনাল বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত। একটি গবেষণা সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, অনেক পুরুষ তাদের পুরুষত্বহীনতা বা যৌন অক্ষমতার বিষয়টি সেক্স পার্টনারের নিকট কৌশলে এড়িয়ে যেতে চান এবং অনেকদিন ভোগার পর গোপনে গোপনে ডাক্তারের পরামর্শ নেন। এ বিষয়ে সঠিক পরামর্শ হল আপনার যদি ইতিমধ্যে দীর্ঘমেয়াদি ইরেকশন বা উত্থানজনিত সমস্যা থাকে তাহলে সবরকম লাজ লজ্জা ঝেড়ে আপনার সেক্স পার্টনারকে খুলে বলুন এবং প্রথমে একজন ই্উরোলজিস্ট ও তাতে কোনো শারীরিক কারণ খুঁজে না পাওয়া গেলে সাইকিয়াট্রিস্ট বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অতি সত্ত্বর নিন।
এ বিষয়ে কতক হেলথ প্রফেশনাল রয়েছে। যেমন- সাধারণ ফিজিশিয়ান, মেন্টাল হেলথ প্রফেশনাল। কতকক্ষেত্রে দেখ যায় যৌনতা বিষয়ক এবং ইরেকশন সম্পর্কিত নানা আলোচনায় তারা এসব প্রফেশনালদের সামনে এক ধরনের অস্বস্তি এবং অস্বাচ্ছন্দ্যবোধে ভুগে থাকে।ফলশ্র“তিতে তারা তাদের মূল যৌন সমস্যার কথা ডাক্তারের কাছে মুখ খুলে বলতে পারেন না। অবশ্য এটা ঠিক যে, ডাক্তার এবং রোগী উভয়ের কিছু ক্রটি বিচ্যুতি থাকতে পারে। অনেক সাধারণ ফিজিশিয়ানসহ মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছেন যারা নিজেরাও যৌনতা নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করতে পারেন না।
আপনার ইরেকশন প্রবলেম বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যা যদি সাইকোলজিক্যাল বা মানসিক সমস্যার কারণে হয়ে থাকে তবে আপনার নিম্নোক্ত হেলথ প্রফেশনালের পরামর্শ নেয়া উচিত।
ইরেকশন ডিসফাংশনে কি কি পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন-
ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থানঘটিত সমস্যা দূরীকরণে প্রথমত যা দরকার তা হচ্ছে উত্থানে ব্যর্থতার সঠিক কারণ খুঁজে বের করা। একটু আগেই উল্লেখ করেছি সাইকোলজিক্যাল বা মনোগত কারণ এবং ফিজিক্যাল বা শারীরিক কারণ যে কোনটিতেই ইরেকশন সম্পর্কীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেহেতু মনোদৈহিক নানা কারন এর সঙ্গে জড়িত তাই এর সঠিক রোগ নির্ণয় একটু জটিল।
সঠিক মূল্যায়নের জন্য একজন অভিজ্ঞ হেলথ প্রফেশনাল সাধারণভাবে নিম্নোক্তভাবে এগিয়ে থাকেন-

এসকল নানা পরীক্ষ-নিরীক্ষার মাধ্যমে ডায়াগনোসিস করা সম্ভবপর হবে আপনার পুরুষত্বহীনতার বা যৌন অক্ষমতার পেছনে মূলত কোন কারণেটি দায়ী। এর ওপর ভিত্তি করে আপনার ডাক্তার মেডিকেশন বা ওষুধ বা অপারেশন (শল্য চিহিৎসা) কোনটি নিতে হবে তা নির্ধারণ করবেন।
কতক পুরুষের আবার পেনিসে রক্তসংবহনকারী ধমনি এবং শিরা পরীক্ষা করতে হয়। এসব পরীক্ষা এক ধরনের ইন্ট্রাকেভার্নাস বা ইন্ট্রাইউরেথ্রাল ইনজেকশন দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
স্নায়ুতন্ত্র সম্পর্কীয় কোনো ধরনের জটিলতা রয়েছে কিনা তাও ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। আলট্রাসনোগ্রাফি এবং রক্তনালীর একটি পরীক্ষা যাকে এনজিওগ্রাফি বলে তার মাধ্যমে মোটামুটি একটা ধারণা পাওয়া যেতে পারে। পেনিসে সংবহনকারী রক্তনালীগুলোকে যদি মেরামত করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে তাহলে সার্জারির মাধ্যমে তা করা সম্ভবপর।
তবে এটা ঠিক যে, পুরুষত্বহীনতার সঠিক কারণটি খুঁজে বের করা একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটি করার জন্য আজ পর্যন্ত সরাসরি কোনো স্ক্রিনিং টেস্ট বা পরীক্ষা আবিস্কৃত হয়নি।
ইরেকটাইল ডিসফাংশনে ট্রিটমেন্টঃ
লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যা বা ইরেকশন প্রবলেমের জন্য নানা ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা রয়েছে তবে এটি নির্ভর করে পুরুষত্বহীনতা কি কারণে হল তার ওপর। যদি মনোগত কারণে লিঙ্গঘটিত সমস্যা হয় তবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞই এর সঠিক চিকিৎসা করতে পারে। শারীরিক বা ফিজিওলজিক্যাল কারণে যদি ইরেকশন সম্পর্কীয় সমস্যা হয় তাহলে তার মূল চিকিৎসা করেন ইউরোলজিস্ট বা মূত্র ও জননতন্ত্র বিশেষজ্ঞ। কতক রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ইরেকশনের সাথে জড়িত রয়েছে মনোদৈহিক উভয় রকমের মেডিকেল জটিলতা। সেক্ষেত্রে সার্বিকভাবে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ইউরোলজিস্টের তত্ত্বাবধানে একত্রে চিকিৎসা নেয়া বাঞ্ছনীয়।
শুরুতে আমার উল্লেখ করেছিলেন ডাক্তাররা ইম্পোটেন্স বা পুরুষত্বহীনতার পরিবর্তে ইরেকটাইল ডিসফাংশন টার্মটিকে বেশি উল্লেখযোগ্য মনে করেন। একজন পুরুষের যৌনক্রিয়া কেবলমাত্র পেনিসে ইরেকশন নয় এর সঙ্গে মনোদৈহিক নানা জটিলা যৌন আচরণ জড়িত। পুরুষত্বহীনতার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে অনেকগুলো নেতিবাচক ধ্যান ধারণা।
চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অনেক দিক বিবেচনা করে দেখা হয় রোগীর বয়স কত, রোগের তীব্রতা কেমন, যৌনতা সম্পর্কে রোগীর দৃষ্টিভঙ্গি কেমন, যৌন পার্টনারের সাথে তার সম্পর্ক, তারা কি কি যৌন আচরণ করে থাকে, যৌন সঙ্গমের পূর্বে তারা সঙ্গম বহির্ভূত যৌন আচরণ করে কিনা ইত্যাদি সবকিছু মূল্যায়ন করে উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা প্রয়োগ করা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাক্তাররা চেষ্টা করেন ননসার্জিক্যাল বা অপারেশন না করে ওষুধ দিয়ে বা মানসিক কারণ দায়ী থাকলে সেক্স থেরাপি দিয়ে চিকিৎসা করতে। অগত্যা যদি সার্জারি অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়ায় সেক্ষেত্রে ইউরোলজিস্টরা শল্য চিকিৎসা করে থাকেন।

নানা ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার মধ্যে রয়েছে-
ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থানের জন্য কেভারজ্যাক্ট নামক ইনজেকশন অথবা মিউস নামক এক ধরনের পদার্থ যা পেনিসে ঢোকাতে হয় এগুলোর মাধ্যমে খুব সহজেই লিঙ্গ উত্থান ঘটে থাকে। আপনি যদি কোনো ওষুধ সেবন করে থাকেন এবং ওষুধ সেবনজনিত কারণে ইরেকশনের সমস্যা দেখা দেয় তবে ডাক্তার আপনার জন্য ওষুধটি বদলিয়ে অন্য কোনো ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারেন।
মনোগত কারণে যদি আপনার পুরুষত্বহীনতা ঘটে থাকে তবে অবশ্যই আপনার প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণ সেক্সুয়াল কাউন্সিলিং। অবশ্য ফিজিক্যাল ডিসঅর্ডারের জন্য যৌন অক্ষমতায় ভুগছে এমন অনেক পুরুষের জন্যও সাইকোথেরাপি বা আচরণগত চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রায় সময়ই দেখা যায় শারীরিক কারণের পাশাপাশি সাইকোলজিক্যাল পুরুষত্বহীনতার সাথে জড়িত থাকতে পারে।
তবে এটা ঠিক যে, ইরেকশন প্রবলেম বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যার সঠিকভাবে সংজ্ঞায়িত করা এবং পরিমাপ করা যেহেতু জটিল তাই কোন চিকিৎসা পদ্ধতি কতটুকু কার্যকারী তার সঠিক পরিসংখ্যান এখনো পর্যন্ত নির্ধারিত হয়নি। তবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে গড়পড়তা হিসেবে দেখা গেছে ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা শতকরা ৮০ ভাগ ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে। তবে সাইকোলজিক্যাল চিকিৎসা যেহেতু দীর্ঘমেয়াদি তাই উচিত রোগীর পর্যাপ্ত ধৈর্য্যসহকারে মনোরগ বিশেষজ্ঞের সার্বিক তত্ত্বাবধানে থেকে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া।
অনেক পুরুষেরই আবার যৌনতার এই ব্যাপারটি নিয়ে একটু ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে । তারা একবার লিঙ্গ উত্থান ঘটার পরেও সাবলীলভাবে যৌন সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পারে না। পঠকদের জানার জন্য ভলা হয় যে, একবার যৌনসঙ্গম করার পর পুরুষের পেনিস কিছু সময়ের জন্য আপাত ঘুমন্ত অবস্থায় বিরাজ করে। এসময়ে লিঙ্গ উত্থত হয় না তাই এটিকে কেউ যদি যৌন অক্ষমতা মনে করেন তাহলে তিনি মারাক্তক ভুল করছেন। এই সময়টিতে সেক্স পার্টনারকে নিয়ে আউটার কোর্স বা সঙ্গম বহির্ভূত যৌন আচরণে যেমন- চুমু দেয়া, একজন অন্যজনকে অন্তরঙ্গভাবে জড়িয়ে ধরা,স্তনে এবং শরীরের নানা অংশে মেসেজ করা,মৃদু চাপ্পড় ইত্যাদি করতে পারেন। দেখা যাবে একটু সময় পেরিয়ে যাবার পর পেনিস ধীরে ধীরে আবার উত্থিত হবে। তাই পুরুষদের এ ব্যাপারটি নিয়ে মাথা না ঘামানোই উচিত। সেক্স থেরাপি বা সেক্সুয়াল কাউন্সিলিং এক্ষেত্রে যদিও পুরুষকে ঘিরে তথাপি সেক্স পার্টনারের সহযোগিতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণও একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সেক্স পার্টনারের সঙ্গে কলহ, মনের মিল না থাকা,একজন অন্যজনকে তীব্রভাবে সন্দেহ করা, ঘৃণা,বিদ্বেষ,ক্ষোভ ইত্যাদি থাকলে অবশ্যই মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া উচিত।
লিঙ্গ উত্থানজনিত নানা সমস্যার প্রতিকারের ক্ষেত্রে প্রথমত বা করা দরকার তা হল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক স্থাপন বা যৌনমিলনের পূর্বে রিলাক্সড বা শিথিল থাকা। যৌন দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলা। বিবাহের প্রারম্ভিক পর্যায়ে স্ত্রীর সঙ্গে নানা ধরনের যৌন আচরণে পুরুষের মনে অনেত ধরনের ভয়-ভীতি বিরাজ করতে পারে। তাদের উচিত সম্পর্কে স্বাচ্ছন্দ্য,সাবনীল এবং স্বাস্থ্যকর দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা। যৌনতা সম্পর্কে নেতিবাচক অনুভূতিগুলো এবং মনোভাবগুলো যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বে ধীরে ধীরে মন থেকে সরিয়ে ফেলা দরকার। সেক্সূয়াল অন্তরঙ্গতা বা যৌনমিলনের পূর্বে স্ত্রীর সঙ্গে যৌন উত্তেজনাকর নানা ধরনের খোলামেলা আলাপচারিতা, সোহাগী ভঙ্গিতে স্ত্রীকে আদর করা এবং একে অপরের সঙ্গে সবকিছু শেয়ার করা ইত্যাদি লিঙ্গ বা পেনিসের উত্থানকে দৃঢ় করবে।
যে কথাটি মনে রাখা প্রয়োজন তা হলো -যৌন আচরণ মানে কেবলমাত্র যৌন সঙ্গম নয়। এটি যৌন আচরণের একটি অংশ। আপনি এবং আপনার সেক্স পার্টনার যদি যৌনমিলনের পূর্বে প্রেম নিবেদনের সময় একে অপরের সঙ্গে খোলামেলা যৌন আলাপে এবং হাল্কামাত্রার হাসি-ঠট্রামূলক খেলাচ্ছলে যৌনক্রীড়া করেন তবে এটি আপানাদের স্ট্রেসবা মনোদৈহিক চাপ এবং যৌন দুশ্চিন্তা কমাতে অনেক সহায়তা করবে। এতে করে আপনি এবং আপনার পার্টনার যৌনমিরনের আগের চেয়ে অনেক বেশি সুখবর অনুভূতি সঞ্চার করতে পারে।
বয়োঃবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ইরেকশনে একটু সমস্যা হওয়া বা একবার ইরেকশন হওয়ারপর তা ধরে রাখা একটু কষ্টকর হতে পারে। তথাপি যৌনমিলনের পূর্বে ফোরপ্লে বা যৌনক্রীড়া বা যৌনক্রীড়া এবং যৌনমিলনের উপযুক্ত মানসিক পরিবেশ আপনার লিঙ্গ উত্থানকে অব্যাহত রাখবে।
লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যার মেডিকেশন বা ওষুধ-
যেসকল মেডিকেশন বা ওষুধের মাধ্যমে লিঙ্গ উত্থান ঘটতে পারে সেগুলো মূলত পুরুষত্বহীনতার মূল ডায়াগনোসিস বা কারণে ওপর নির্ভর করে। রক্তসংবহনতন্ত্র বা ভাসকুলার,হরমোনাল স্নায়ুতন্ত্র সম্পর্কীয় বা সাইকোলজিক্যাল (মনোগত কারণ) যে কারণে লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা হয় এদের প্রত্যেকটিরই খুব ভালো চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা রয়েছে। আমরা দীর্ঘ চিকিৎসা জীবনে দেখেছি ওষুধ চিকিৎসা পাশাপাশি বেশিরভাগ রোগীকে সেক্সুয়াল কাউন্সিলিং(সাইকোথেরাপি) এবং সেক্স থেরাপি বেশ ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে। অবশ্য এসব ক্ষেত্রে দৈহিক কারণের পাশাপাশি মানসিক কারণও দায়ী থাকতে পারে।
লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যাটি যদি ওষুধ সেবনজনিত কারণে হয়ে থাকে তবে আপনার ডাক্তার ওষুধের ডোজ পরিবর্তনের কথা ভাবতে পারেন অথবা ওষুধ বদলিয়ে অন্য কোনো গ্র“পের মেডিকেশন প্রেসক্রাইব করতে পারেন। ওষুধ সেবনজনিত কারণে যদি সাময়িকভাবে আপনার লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা ঘটে তবে হুট করে ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত ওষুধ সেবন বন্ধ করে দেবেন না। প্রকৃত অর্থেই ওষুধ সেবনের জন্য এই সমস্যা হচ্ছে কিনা তা অভিজ্ঞ ডাক্তারই বলতে পারবেন।
ওষুধ দিয়ে চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হলঃ
ডাক্তার আপনাকে যেসকল মেডিকেশন প্রেসক্রাইব করতে পারেন সেগুলো হলোঃ
ইরেকশনের চিকিৎসা (সার্জারি)
ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যায় যখন মেডিকেশন বা ওষুধ সাইকোথেরাপি বা আচরণগত চিকিৎসা ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয় এবং রোগীর দৈহিক কোনো কারণ নির্ধারণ করা সম্ভবপর হয় তখন ডাক্তার আপনাকে সার্জারির পরামর্শ দিতে পারেন।এই সম্পর্কিত সার্জারি বা শল্যচিকিৎসাগুলো করে থাকেন ইউরোলজিস্টে বা মূত্র এবং জননতন্ত্র বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি পরিচালিত আমেরিকান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে,পিনাইল ইমপ্ল্যান্টস(প্রতিস্থাপন) শতকরা ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। কতক পুরুষের ক্ষেত্রে আবার পেনিস বা লিঙ্গে রক্ত সংবহনকারী নালীতে এক ধরনের চিকিৎসা করা হয় এটিকে আমরা রিপেআর থেরাপি বলে থাকি। যদি রক্ত সংবহননালীর কোনো অসুখের জন্য এমনটি হয়ে থাকে তাহলে সেটিকে শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে সারানো যেতে পারে। অনেক যুবকদের ক্ষেত্রে দেখা যায় কোনো ধরনের ইনজুরি বা আঘাতের কারণে রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হলে যেমন-বাস বা মোটরসাইকেল এক্সিডেন্ট তখন এ ধরনের সার্জারি খুব কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তবে এই ধরনের রিপেআর শল্য চিকিৎসা অভিজ্ঞ ইউরোলজিস্টের হাতে করানোই সমীচীন। অন্যথায় হিতে অহিত হওয়ার যথেষ্ঠ সম্ভবনা রয়েছে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে সার্জারির মাধ্যমে মূলত ইরেকশনের যে চিকিৎসা প্রয়োগ করা হয় সেগুলো হলোঃ
পেনাইল ইমপ্ল্যান্টস (প্রতিস্থাপন)।
পুরুষাঙ্গে রক্ত সংবহন নালীতে সার্জারি (রিপেআর থেরাপি)।
সবরকমের মেডিকেশন বা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা ও সাইকোথেরাপি বা আচরণগত চিকিৎসা প্রয়োগ করার পর সার্জারির বিভিন্ন ধরনের বিপজ্জনক ঝুঁকি চিন্তা করে তবেই ডাক্তার আপনাকে শল্য চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন। রক্ত সংবহন নালীর রিপেআর থেরাপির নামে যে সার্জারির কথা বলা হল সেগুলো কেবলমাত্র রিভাসকুলারাইজেশন স্পেশালিস্টারাই করে থাকেন।

ইরেকটাইল ডিসফাংশনের অন্যান্য চিকিৎসাঃ
ইতিমধ্যে লিঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যায় অনেক চিকিৎসা পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো মূলত পূর্বের চিকিৎসার পদ্ধতিগুলোরই সামান্য রূপান্তর বা মোডিফিকেশন। এগুলোর মাঝে রয়েছে বিশেষ ধরনের খালিকরণের বা ভ্যাকুয়াম ডিভাইস এবং বিশেষ সাইকোথেরাপি(সেক্স থেরাপি)।
ভ্যাকুয়াম ডিভাইস বা খালিকরন যন্ত্রের মাধ্যমে সব প্রকারের লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যার চিকিৎসা করা সম্ভব (ফিজিক্যাল বা শারীরিক, মনোগত সমস্যা এবং মিশ্র সমস্যা)।
যেসকল পুরুষের ইরেকশন বা লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যা ,মূলত মনোগত কারণে হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি বা আচরণগত চিকিৎসা অত্যন্ত কার্যকরী। এই চিকিৎসা থেরাপি অন্যান্য মেডিকেশন দিয়ে চিকিৎসা বা খালিকরণ ডিভাইসের পাশাপাশি চলতে পারে। তবে এর জন্য প্রয়োজন প্রচুর সেক্সুয়াল কাউন্সিলিং। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত সেক্সুয়াল কাউন্সিলিংয়ের জন্য আলাদাভাবে সেক্স থেরাপিস্ট গড়ে ওঠেনি। এজন্য সেক্স সমস্যার কাউন্সিলিং এখানে করে থাকেন অভিজ্ঞ মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞরা।এক ধরনের শারীরিক ব্যায়াম রয়েছে যাকে বলা হয় পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ। এ সম্পর্কে আমরা নানা প্রবন্ধে আলোচনা করেছি। এটি অনেকটা কেজেল এক্সারসাইজের মত, অনেক পুরুষের লিঙ্গ উত্থানজনিত সমস্যায় এটি ভালে কাজ করে থাকে। সবচেয়ে বড় কথা হল এই ব্যায়ামগুলোর বিপজ্জনক ঝুঁকি নেই। তবে এতে কাজ না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। তাহলে অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে মূলত যা দাঁড়ায় তা হলঃ
ইরেকশন বা উত্থানঘটিত সমস্যা দূরীকরণে প্রথমত যা করা দরকার তা হচ্ছে উত্থানে ব্যর্থতার সঠিক কারণ খুঁজে বের করা। একটু আগেই উল্লেখ করেছি সাইকোলজিক্যাল বা মনোগত কারণ এবং ফিজিক্যাল বা শারীরিক কারণ যে কোনোটিতেই ইরেকশন সম্পর্কী সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেহেতু মনোদৈহিক নানা কারণ এর সঙ্গে জড়িত তাই এর সঠিক রোগ নির্ণয় একটু জটিল।

1 comment: